চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ীকে কো.পা-লে.ন যুবদল নেতা

চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ীকে কোপালেন যুবদল নেতা

ছবি সংগ্রহকৃত


নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে চাঁদা না পেয়ে জসীম উদ্দীন (৩৫) নামে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগ ‍উঠেছে যুবদল নেতা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকেলে মোহনগঞ্জ পৌরশহরের পাথরঘাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম ব্যবসায়ী আহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পৌর যুবদলের সদস্য সচিব ফয়সাল আহমেদ খোকনের নেতৃত্বে তার অনুসারী ১০-১২ জন হামলায় অংশ নেয় বলে জানিয়েছেন আহত জসীম উদ্দীনের স্ত্রী নিশা আক্তার।

আহত জসীম উদ্দীন উপজেলার পানুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি রাজধানীতে থাকা রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স আফিফ ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী। তিনি পরিবারসহ ঢাকায় বসবাস করেন।

আহত জসীম উদ্দীনের স্ত্রী নিশা আক্তার বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে যুবদল নেতা খোকন ও তার সহযোগীরা জসীম উদ্দীনের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। চাঁদা না দেওয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়। গত বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে আমরা বাড়িতে এসেছি। আজ গ্রামের বাড়িতে জুমার নামাজ শেষে আড়াইটার দিকে মোহনগঞ্জ বাজারে যায় ইফতার কিনতে। পাথরঘাটা এলাকায় ইফতার কেনার সময় খোকনসহ ১০-১২ জন মিলে অতর্কিতভাবে তার ওপর হামলা চালায়। এ সময় রামদা দিয়ে কুপিয়ে ও রড দিয়ে পিটিয়ে জসীমকে গুরুতর জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মমেক হাসাপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসকরা। পরে ময়মনসিংহ নিয়ে গেলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসক।

নিশা আক্তার আরও বলেন, জসীমের মাথায় রামদার গভীর কোপ লেগেছে। হাত, পা রড দিয়ে পিটিয়ে ভেঙে ফেলেছে। এ ছাড়া শরীরের অনেক জায়গায় রামদার কোপ লেগেছে। এ ঘটনায় আমরা মামলা করব।

এদিকে অভিযুক্ত যুবদল নেতা ফয়সাল আহমেদ খোকনের মোবাইলে কল দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ওসি মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।


জমি নিয়ে বিরোধ, প্রতিপক্ষের হামলায় ১১ জন আহত



পাবনার সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণদিয়ার মন্ডলপাড়ায় সেকেন্দার আলীর নিজ জমিতে মাটি ফেলার জেরে বিএনপির নেতার পরিবারের ওপর হামলা চালিয়েছে প্রতিপক্ষ। একই বাড়ির প্রতিপক্ষের আরশেদ মন্ডল ও আশরাফ মন্ডলের নির্দেশে গভীর রাতে এ হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

প্রতক্ষ্যদর্শী ব্যক্তিরা ও স্থানীয়রা জানান, দ্বন্দ্বমূলক জমিটি নিয়ে একটা মামলা চলছিল। বিভিন্ন সময়ে মামলার রায় সেকেন্দার আলী সরদারের পক্ষে এলেও আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে জায়গাটি দখলে রাখেন মান্নান মন্ডল।

তারা আরও বলেন, সম্প্রতি ওই জমির মামলার রায় সেকান্দার আলীর পক্ষে দেয় পাবনা সেটেলমেন্ট অফিস। রায় পাওয়ার পর সেকেন্দার আলী তার নিজ জমিতে মাটি ফেলতে যান। তখন মান্নান মন্ডল ও তার ছেলে মজিদ ও বাবুর নেতৃত্বে হাঁসুয়া, দা, জিআই পাইপ ও লাঠিসোঁটাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো ও এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে জখম করা হয়।

প্রতক্ষ্যদর্শীরা আরও বলেন, এক দফা হামলার পর সেকান্দার আলীর বাড়িতে গিয়ে ফের হামলা চালানো হয়। হামলার সময় কয়েকজন নারী এগিয়ে এলে তাদেরও বেধড়ক মারধর করা হয়। হাঁসুয়া ও রামদার কোপে আহত হন নারীরা। হামলায় গুরুতর আহত ১১ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান তারা।

এ হামলার সঙ্গে রুবেল মন্ডল (৩৪), রহমান মন্ডল (৪২), সেলিম মন্ডল (৪৬), আজমত মন্ডল (৩৬), টিটু মন্ডল (৩৪), আলিম মন্ডলসহ (৪১) প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন জড়িত থাকার অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

হামলায় আহত ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সামাদ বলেন, আমরা এই ন্যক্কারজনক হামলার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে বিচার চাই। তাদের অতি দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।

হামলার শিকার পরিবারের সদস্য ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আল আমিন হোসেন বলেন, গত ১৬ বছর ধরে আমরা নির্যাতনের শিকার। আমাদের জায়গা দখল করে রেখেছে তারা। কেবল আমাদেরই নয়, পুরো অঞ্চলজুড়েই ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রাখে তারা। আমার পরিবারের ১১ জন সদস্যকে গুরুতর আহত করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। সরকারের কাছে অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি করছি।

এই অভিযোগ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুস সালাম কালবেলাকে বলেন, এ ঘটনা তাদের গোষ্ঠীর মধ্যেই ঘটেছে। এখানে আওয়ামী লী-বিএনপির কোনো দ্বন্দ্ব নয়। হামলার খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে আমরা টিম পাঠিয়েছি। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আরশেদ মন্ডল নামের একজনকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা হবে এবং পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



Previous Post Next Post