ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে চাঁদা দাবি, বৈষম্যবিরোধী দুই নেতাসহ কারাগারে ৮
খুলনায় এক ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে চাঁদা দাবির ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন নেতাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী বাপ্পী সরকার। এদের মধ্যে আটজনকে আটকের পর কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গতকাল বুধবার রাতে ওই আটজনকে আটক করে পুলিশ। পরে বৃহস্পতিবার সকালে খালিশপুর থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী।
কারাগারে যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা মহানগর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক রায়হান, খুলনা মহানগরীর সহকারী মুখপাত্র এসএম শামুন ইশমাম, সোহেল শেখ, শেখ সাজ্জাদ, নাঈমুর রহমান, শেখ রাকিবুল ইসলাম, মোহিদুল ইসলাম রাজন ও তৌহিদুল ইসলাম শাওন।
মামলার আরেক আসামি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা মহানগরীর নির্বাহী সদস্য মনিরুজ্জামান টিপু পলাতক রয়েছেন।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী বাপ্পি সরকারের স্ত্রী শাহানাজ বেগম জানান, বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ৮/৯ জন যুবক তাদের বাসায় উপস্থিত হয়ে নিজেদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে ঘরে প্রবেশ করেন। এরপর তার স্বামী বাপ্পি সরকারকে বলে আপনি আওয়ামী লীগকে টাকা দেন এবং আপনার কাছে অস্ত্র রয়েছে। তারা বলে, আমাদের বিষয়ে ডিজিএফআই, এনএসআই ও পুলিশ অবগত আছে এবং তাদেরকে তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। এ থেকে বাঁচতে হলে তাদের ৫ লাখ টাকা দিতে হবে। বাপ্পি সরকার টাকা দিতে অস্বীকার করলে ছাত্ররা তাকে মারপিট ও তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। বাপ্পির স্ত্রী ও বাচ্চাদের চিৎকার ও কান্নাকাটির শব্দ শুনে ছাত্র পরিচয় দেওয়া যুবকদের আটকে ফেলে পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসী। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আটজনকে আটক করে।
নগরীর খালিশপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে আটজনকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ওই এলাকায় চাঁদাবাজির আরও অভিযোগ রয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
Earn 5$ Open Account Bkash.
পুলিশ হেফাজত থেকে পালানো ছাত্রলীগ কর্মী রবিন গ্রেপ্তার
বরিশালে পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে যাওয়া ছাত্রলীগ কর্মী খালিদ খান রবিনকে গ্রেপ্তার করেছে করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ভোরে রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকা থেকে বরিশাল মেট্রোপলিটনের পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি টিম তাকে গ্রেপ্তার করে।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গ্রেপ্তার রবিনকে বরিশালে নিয়ে আসা হয়েছে। শারীরিকভাবে অসুস্থতার কারণে বর্তমানে তাকে পুলিশ হেফাজতে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) ভর্তি রেখে চিকিৎসা করানো হচ্ছে।
এর আগে বুধবার (১৪ মে) দুপুরে রবিনকে শেবাচিম হাসপাতাল এলাকা থেকে আটকের পর গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয় ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। মারধরে আহত হওয়ায় পুলিশ তাকে চিকিৎসার জন্য শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়।
পুলিশ সদস্যরা তাকে হাসপাতালে একা রেখে চলে যান। সেই সুযোগে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী খালিদ খান রবিন।
এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানাধীন স্টিমারঘাট (নানিবুড়ি) পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ টিএসআই রেজাউল করিম রেজা, এটিএসআই মাহবুব আলম, কনস্টেবল জাহাঙ্গীর ও হাবিবুর রহমানকে শাস্তিস্বরপ প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।
তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনর শফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, পুনরায় গ্রেপ্তার রবিনকে ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই নগরীর সিএন্ডবি রোডে বিএনপির শোক শোভাযাত্রায় হামলার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে।
গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতার স্বজনরা দাবি করছেন, রবিন পালিয়ে যায়নি। পুলিশের অবর্তমানে শেবাচিম হাসপাতালে নিরাপত্তার অভাব এবং সুষ্ঠু চিকিৎসা না পাওয়ার শঙ্কায় রবিনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তাছাড়া পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার আগে ছাত্রদল এবং স্থানীয়দের গণপিটুনিতে তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন। এজন্য দ্বিতীয়বার ঢাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর তাকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে বরিশালে নিয়ে আসা হয়।