বৈষম্যবিরোধী নেতাদের ওপর হা.ম.লা.র অভিযোগ, আহত ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি

বৈষম্যবিরোধী নেতাদের ওপর হামলার অভিযোগ, আহত ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি



কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলায় আহত অন্তত ১০ জনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার রাত আটটার দিকে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে এ ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে আছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির সদস্যসচিব মোস্তাফিজুর রহমান, নাগরিক কমিটির সদস্য সুলতান মারুফ, আলভি, ইব্রাহিম, জুবায়ের, নয়ন, আলী আহসান, সোহান ও রেজোয়ান। এর মধ্যে ইব্রাহীমের অবস্থা গুরুতর। তাঁর মাথায় লাঠির আঘাতসহ বেশ কয়েকটি আঘাত রয়েছে।

মাসে লক্ষ টাকা আয়। নিজের এলাকায় ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা।

ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে হাসপাতালের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সামনে দাঁড়িয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়ার যুগ্ম আহ্বায়ক সায়াদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিটিউটের সামনে সমবায় মার্কেটে সম্প্রতি আবরার ফাহাদের নামে একটি পাঠাগার উদ্বোধন করা হয়েছে। সেখানে নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা বসেন। কিছু উগ্রপন্থী মানুষ লাইব্রেরিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করে। এ নিয়ে বৈষমবিরোধী কমিটিকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। এ উদ্দেশ্যে রোববার কিছু উগ্রপন্থী দল লাইব্রেরির সামনে স্লোগান দেয়। তাদের উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করে।

হামলায় আহতদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার রাতে
হামলায় আহতদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার রাতে
ছবি: প্রথম আলো

সায়াদ ইসলাম আরও বলেন, ‘যারা ছিল তারা সবাই ছোট। আমাদের ভাই। তাদের কখনো কিছু বলা হয়নি। একপর্যায়ে সবাই মিলে সরকারি কলেজ মাঠে যাওয়া হয়। সেখানে সবাই মিলে কথা বলে বিষয়টি শোনা হয়। জাতীয় নাগরিক কমিটিসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা উপস্থিত ছিলেন। হঠাৎ ৮–১০টা অটোতে করে ছেলেরা এসে মিশে যায় এবং হামলা চালায়। তাদের হাতে লাঠিসোঁটা ছিল। এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। তাদের কারও নাম এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। তবে তারা সব সময়ই উগ্রবাদী। তারা কখনোই চায় না এ দেশে সংস্কার হোক।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের বিতর্কিত করতেই এই হামলা চালানো হয়েছে। আমাদের ১৫–১৬ জন আহত হয়েছে।’

এদিকে হামলার ঘটনার পর হামলায় অভিযুক্ত পক্ষের দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তখন সেখানেও দুই দফায় উভয় পক্ষের মধ্যে মারধরের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় চিকিৎসাধীন রোগীদের অনেকেই আতঙ্কে ঘুম থেকে উঠে পড়েন। রোগীর কয়েকজন স্বজনকে কান্না করতে দেখা যায়। সাংবাদিকেরা ছবি তুলতে গেলে তাঁদেরও বের করে দেওয়া হয়। রাত ১০টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখার সময় হাসপাতালে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হামিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত ১০ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের সবারই শক্ত কিছু লাঠি নিয়ে আঘাত করার চিহ্ন দেখা গেছে। এর মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল আলীম প্রথম আলোকে বলেন, কলেজ মাঠে একটা ঘটনা ঘটেছে। এরপর হাসপাতালেও একটু ঝামেলা হয়। সবখানেই পুলিশ রয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ কাজ করছে।

হাসপাতালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়ার মুখপাত্র পারভেজ মোশাররফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘যারা বর্তমান কমিটিকে বিতর্কিত করতে চাচ্ছে, তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব ও নাগরিক কমিটির নেতাসহ তাদের অন্তত ৮ –৯ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।’

Previous Post Next Post