হিজাব ও নিকাব পরা ছাত্রীদের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন সিদ্ধান্ত

হিজাব ও নিকাব পরা ছাত্রীদের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন সিদ্ধান্ত


ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও গোপনীয়তা বিবেচনায় রেখে নারী শিক্ষক, নারী কর্মকর্তা ও নারী কর্মচারীদের মাধ্যমে নিকাব ও হিজাব পরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের পরিচয় শনাক্তকরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার উপাচার্যের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ডিনস কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছাত্রীদের পরিচয় শনাক্তকরণের জন্য প্রয়োজনে নারী সহকারী প্রক্টরের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পরিচয় শনাক্তকরণের জন্য বায়োমেট্রিক সিস্টেম চালুর সম্ভাব্যতার বিষয়টি যথাসময়ে যাচাই করা হবে বলেও জানানো হয়।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলা বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী তাহমিনা আক্তার তামান্না বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার পর হিজাব-নিকাব নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। এ নিয়ে সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতিতে সংবাদ সম্মেলনও করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তাহমিনা বলেন, আজ পরীক্ষা দেওয়ার সময় কর্তব্যরত শিক্ষক তাঁকে হাজিরা খাতায় সই করতে দেন এবং তাঁর খাতাটা স্বাক্ষর করতে হাতে নেন। তখন ওই শিক্ষক তাঁকে মুখ দেখাতে বলেন। তিনি রাজি না হওয়ায় শিক্ষক চলে যান। এবং একটু পরে একজন শিক্ষিকা এসে তাঁর স্বাক্ষর নেন। তাহমিনা মনে করেন, অনেকেই এমন সমস্যার মুখোমুখি হন। এর সমাধান প্রয়োজন। তাই তিনি এ নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন। এই পোস্টের দুই ঘণ্টা পর বিভাগের চেয়ারম্যান তাঁকে ফোন করে বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বাস দেন।


এই শিক্ষার্থী সংবাদ সম্মেলনে কয়েকটি দাবি জানান। এগুলো হলো অনতিবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের চেহারা দেখে শনাক্ত না করে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের শনাক্ত করতে হবে। বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করার পূর্ব পর্যন্ত নারী শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ও ভাইভায় নারী শিক্ষিকার মাধ্যমে শনাক্ত করার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং এর আগে যেসব নারী শিক্ষার্থীকে নিপীড়ন ও হেনস্তা করা হয়েছে, সেসব ঘটনার যথাযথ তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে হেনস্তা, গ্রেপ্তার আসামির জামিন


শাহবাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে গ্রেপ্তার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সহকারী বাইন্ডার মোস্তফা আসিফের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুব আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।


আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মামলার বাদী তাঁর মামলা প্রত্যাহারের জন্য থানায় আবেদন করেন। পরে মামলার বাদীর আবেদন আদালতে জমা দিয়েছে। আসামিপক্ষ থেকে জামিনের আবেদন করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত এক হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন।


ওই ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় মোস্তফা আসিফকে গ্রেপ্তার করেছে শাহবাগ থানা-পুলিশ। হেনস্তার শিকার ছাত্রী এ বিষয়ে প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেন এবং পরে শাহবাগ থানায় মামলা করেন।


এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ওই ব্যক্তি ছাত্রীটিকে তাঁর পোশাক নিয়ে রাস্তায় হেনস্তা করেন। ছাত্রীটি এ নিয়ে প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দেন এবং পরে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেন। পরে বিকেলে শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তকে শনাক্ত করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসে। এ সময় ওই ব্যক্তি ছাত্রীটিকে হেনস্তার করার কথা স্বীকার করে। পরে তাঁকে শাহবাগ থানায় পাঠানো হয় এবং গ্রন্থাগারকে এ বিষয়ে জানানো হয়।


মোস্তফা আসিফের মুক্তির দাবিতে শাহবাগ থানায় অন্তত আট ঘণ্টা অবস্থান নিয়েছিলেন একদল ব্যক্তি। অবস্থানকালে তাঁদের কেউ কেউ নিজেদের ‘তৌহিদি জনতা’ হিসেবে পরিচয় দেন।




Previous Post Next Post